মহামারী রোধে মহানবী (সা.) এর নির্দেশনা অত্যন্ত কার্যকর: মার্কিন গবেষক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: বিশ্বে এখন আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। এরই মধ্যে বিশ্বের ১৯৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। চীনের উহান থেকে উৎপত্তি এই ভাইরাস এখন তাণ্ডব চালাচ্ছে ইউরোপজুড়ে। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে ইউরোপের ইতালিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৬০১ জন, আর স্পেনে মারা গেছে ৫৩৯ জনের।

ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাসের এই প্রকোপকে ‘বিশ্ব মহামারী’ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

ভয়াবহ এই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতে অসংখ্য উপায় ও উপকরণের শরণাপন্ন হচ্ছেন গবেষকরা। কিন্তু এ থেকে পরিত্রাণের তেমন কোনও আশার আলো দেখা যাচ্ছে না।
এই সংকটাপন্ন সময়ে তরুণ মার্কিন গবেষক ড. ক্রেগ কন্সিডাইন করোনা প্রতিরোধে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে অবস্থিত রাইস ইউনিভার্সিটির একজন গবেষক হিসেবে কর্মরত। খবর দ্য নিউজ উইকের।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইমিউনোলজিস্ট বিশেষজ্ঞ ডাক্তার অ্যান্থনি ফসি এবং মেডিক্যাল রিপোর্টার ডাক্তার সঞ্জয় গুপ্তের মতো বিজ্ঞ চিকিৎসকরা করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি সুন্দর ব্যবস্থাপনায় হোম কোয়ারেন্টিনের কথা বলেছেন। একই সঙ্গে সুস্থ লোকদের জন্য জনসমাগম এড়িয়ে একাকী জীবনযাপনের পরামর্শ দিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, এসব উপায়ই করোনা থেকে বেঁচে থাকার সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম।

অথচ আপনারা কি জানেন মহামারির সময়ে সর্বপ্রথম কে এই কোয়ারেন্টাইনের উদ্ভাবন করেছেন? আজ থেকে প্রায় ১৩শ’ বছর আগে ইসলাম ধর্মের নবী মুহাম্মাদই (সা.) পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম ‘কোয়ারেন্টাইন’-এর ধারণা দেন। তাঁর সময়ে উল্লেখযোগ্য কোনও সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ছিল না। তবে তিনি এসব রোগব্যাধিতে করণীয় সম্পর্কে তার অনুসারীদের যে নির্দেশনা দিয়েছেন এককথায় তা ছিল দুর্দান্ত! তাঁর মূল্যবান সেই পরামর্শ মানলেই করোনার মতো যেকোনও মহামারী থেকে যথেষ্ট সচেতনতা অবলম্বন করা যায়।

এ প্রসঙ্গে তিনি (মহানবী) বলেছেন, “যখন তুমি কোনো ভূখণ্ডে প্লেগ ছড়িয়ে পড়ার খবর শুনতে পাও তখন সেখানে প্রবেশ কোরো না। পক্ষান্তরে প্লেগ যদি তোমার অবস্থানস্থল পর্যন্ত পৌঁছে যায় তাহলে ওই জায়গা ত্যাগ কোরো না।”

তিনি আরও বলেছেন, “সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ মানুষের থেকে দূরে থাকবে।”

এভাবে বিভিন্ন সময়ে নানা পরিস্থিতিতে ইসলামের নবী মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর অনুসারীদের বিশেষ করে রোগব্যাধিতে আক্রান্ত লোকদের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারেও উদ্বুদ্ধ করতেন।

এ ব্যাপারে তাঁর অমূল্য কিছু কথামালা হল, ‘পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অংশ’, ‘ঘুম থেকে জেগেই দুই হাত ধৌত করো। কেননা ঘুমের মধ্যে তোমার হাত কোথায় স্পর্শ করেছে তুমি জান না’, ‘খাওয়ার আগে ও পরে ধৌতকরণের মধ্যেও বরকত রয়েছে’ ইত্যাদি।

মোটকথা, তাঁর অনুসারীরা যেকোনও পরিস্থিতির সম্মুখীন হোক তা থেকে পরিত্রাণের ব্যাপারেই তিনি তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। ধর্মীয় ক্ষেত্রে তিনি যেমন ব্যাপক অবদান রেখে অমর হয়ে আছেন, ঠিক তেমনই মানুষের জীবনযাপন বিষয়ক মহামূল্যবান যে পরামর্শ তিনি দিয়ে গেছেন তা আজও অনুকরণীয়।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.