ঢাকার ‘পাঠাও’ চালক হত্যা মামলার আসামী কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুরের টেরর সুমন অবশেষে গ্রেফতার

নিউজ ডেস্ক :: পুলিশের কাছে স্বীকারের পর আদালতে গিয়ে হাকিমের কাছেও মোটর সাইকেল চালক মিলন মিয়াকে হত্যা করে তার বাইকটি ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার নুর উদ্দিন সুমন। ঢাকার শাহজাহানপুর থেকে সোমবার প্রথম প্রহরে গ্রেপ্তার সুমনকে (৩৮) বিকালে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিঝিল জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম আদালতকে জানান, আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত।
সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ ১৬৪ ধারায় আসামি সুমনের জবানবন্দি নিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ২৬ আগস্ট মালিবাগ ফ্লাইওভারে ছুরিকাঘাতের শিকার হন পাঠাও চালক মিলন। তবে ওই সময় তিনি রাইড শেয়ারিং অ্যাপের পরিবর্তে ভাড়ায় যাত্রী বহন করছিলেন। ছিনতাইকারী তার গলায় ছুরিকাঘাত করে মোটর সাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে গেলে জখম গলা চেপে ফ্লাইওভারের শান্তিনগর অংশে নেমে আসেন মিলন। এরপর পুলিশের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনায় মিলনের স্ত্রী শিল্পি বেগম শাহজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় সুমনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

হত্যা ও বাইক ছিনতাইয়ের বিবরণে সুমন পুলিশকে বলেছেন, রাত আনুমানিক ৩টার দিকে মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারে উঠতে আবুল হোটেলের ঢালে সুমনের মোটর সাইকেলটি থামান তিনি। গুলিস্তান যাওয়ার কথা বলে ৫০ টাকা ভাড়া ঠিক করেন।
ফ্লাইওভারের সবচেয়ে উপরের সড়কে পৌঁছালে মোটর সাইকেল থামাতে বলেন সুমন। তিনি তখন মোটর সাইকেল নিজেই চালাতে চাইলে মিলন তাতে বাধা দেন। তা নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। সুযোগ বুঝে সুমন তার সঙ্গে থাকা অ্যান্টিকাটার দিয়ে মিলনের গলায় উপর্যুপরি আঘাত করে তাকে জখম অবস্থায় ফ্লাইওভারে রেখে মোটরসাইকেল ও মোবাইল নিয়ে চলে যান।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেনও সুমনকে গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে একই বিবরণ পাওয়ার কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন।
বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মোটর সাইকেল, হেলমেট ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
সুমনের বিরুদ্ধে মতিঝিলে একটি ছিনতাই ঘটনার সম্পৃক্ততার তথ্য ইতোমধ্যে পেয়েছে পুলিশ। আরও কোনো অভিযোগ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত গত ২৬ অগাস্ট রাতে মিলনকে হত্যা করে মটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনায় শাহজাহানপুর থানায় একটি মামলা হয়। ঢাকার মালিবাগ ফ্লাইওভারে মধ্যরাতে পাঠাও চালককে গলাকেটে হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামী নুর উদ্দিন সুমন নোয়াখালীর কোম্পানীগন্জ উপজেলার মুছাপুর ছোটধলী গ্রামের ০৫ নং ওয়ার্ডের ওজি উল্যাহ মাষ্টার বাড়ির প্রবাসী আজাদের পুত্র। সুমনের বিরুদ্ধে তৎকালিন ৪দলীয় জোট সরকার শাসনামলে কোম্পানীগঞ্জে চুরি, চাঁদাবাজি, হাইজ্যাক, লুটপাট, ছিনতাই, জিন্মিকরণ, মাদক ব্যবসাসহ নানা ধরনের অভিযোগ ছিল । তার অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠে, তখন ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পেতনা । আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর সে গা ঢাকা দেয়।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.